সিংহের মতো পথ চলুন



সিংহকে কখনো হাতির সামনে ভয় পেতে দেখেছেন? আপনি যদি প্রকৃত নেতা হতে চান অথবা অনন্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে চান, তবে সিংহের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করুন। অন্য প্রাণীর চেয়ে সিংহ কেন আলাদা? কেন তিনি জঙ্গলের রাজা? তিনি কি জঙ্গলের সবচেয়ে শক্তিশালী বা দ্রুততম বা সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী?  উত্তরটি  হল ‘না’,তবুও তিনি জঙ্গলের রাজা। কারণ তার মনোভাব তাকে 'রাজা' করে তোলে।

সে কখনও তাঁর চেয়ে শক্তিশালী এবং বুদ্ধিমান হাতিদের শিকার করতে ভয় পায়না। তার আত্মবিশ্বাস রয়েছে যে সেই রাজা এবং হাতি ও অন্যান্য প্রাণী তাঁর জন্য মধ্যাহ্নভোজন। সিংহ যখন প্রয়োজন তখন বিশ্রাম নেয় এবং সে কখনই অযৌক্তিক লম্ফঝ্ম্ফ করে না।  যখন সে কাজ  করে, বা সে গর্জন করে, গ্রহের প্রতিটি প্রাণী তাকে ভয় করে এবং শ্রদ্ধা করে। 


নেতাজি সুভাষচন্দ্র ছিলেন সিংহ





নেতাজি ছিলেন সিংহের মতো। নিজের সম্পর্কে তার প্রচণ্ড আস্থা ছিল এবং তিনি অন্যদের থেকে আলাদা ছিলেন। সুতরাং, ব্রিটিশ সরকার সর্বদা তাঁকে ভয় করত। তাই তারা এই ভয়ঙ্কর শত্রূর হাত থেকে বাঁচতে তাঁকে বারবার কারাগারে বন্দী করে। এমনকি তাঁকে ইউরোপে নির্বাসনে প্রেরণ করা হয়। গান্ধী, নেহেরু বা ভারতের অন্য কোন নেতার প্রতি ব্রিটিশরা কখনও এ জাতীয় শ্রদ্ধা (ব্রিটিশদের শত্রু হিসাবে) প্রদর্শন করেননি। নেতাজির প্রতি ব্রিটিশদের এই জাতীয় ব্যবহার  প্রমাণ করেছিল যে, তিনি ছিলেন ব্রিটিশদের সবচেয়ে বিপজ্জনক শত্রূ  ।

কেবল ভারতের মাটিতেই নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার লোকেরা ভারত থেকে ব্রিটিশদের উৎখাত করার জন্য তাঁর সাথে হাত মিলিয়েছিলেন। স্বাধীনতার জন্য অন্য ভারতীয় নেতাদের ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিজ ক্ষমতার প্রতি বিশ্বাসের অভাব ছিল। তাই তারা স্বয়ত্তশাসনের দাবি করেছিল। সর্বদা কিছু সংস্কারের পরিবর্তে তারা ব্রিটিশদের সাথে সমঝোতা করেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ 1929 সালে স্বাধীনতার দাবি গৃহীত হওয়ার পরেও তারা ১১ দফা দাবি করে, যার সাথে স্বাধীনতার দাবির কোনও মিল ছিলনা। এর পরে তারা গান্ধী-আরউইন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। জাতীয় কংগ্ৰ্রেসের নেতারা বিশ্বযুদ্ধের সময়ও ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আক্রমণে যেতে চাননি। যেখানে সুভাষচন্দ্রের দাবি ছিল আপোষহীন সংগ্রাম। তারা নিজের ক্ষমতায় নয়, স্বাধীনতার জন্য ব্রিটিশদের মুখাপেক্ষী ছিল। ফলে তারা সুভাষচন্দ্রের আপোষহীন সংগ্রাম এর কথায়  বিরক্ত বোধ করেছিল। তারা চায়নি ভারতীয়দের স্বাধীনতা আন্দোলন  ব্রিটিশদের যুদ্ধ চেষ্টায় কোন বাধা দান করে। সুতরাং,তারা ব্রিটিশদের বিরক্ত করতে চায় নি। আহিংসার কী তামাশা ! তারা ব্রিটিশ স্বার্থের জন্য স্বাধীনতার সাথে আপোষ করতে পারে, এজন্য স্বাধীনতাপিয়াসী সুভাষ চন্দ্রকে অন্যান্য বিপ্লবীদের বিরোধিতা করতে তাদের বাঁধেনি ।

সুভাষচন্দ্র  ছিলেন ভারতের প্রকৃত সিংহ। তিনি ব্রিটিশদের সাথে কোনও আপোষ করতে চাননি এবং স্বাধীনতার জন্য চরম ও সর্বাত্মক হামলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ব্রিটিশ এবং তার সহকর্মী INC নেতারা স্বাধীনতার জন্য ব্রিটিশদের আঘাত করার চেষ্টা থেকে তাকে বিরত করতে পারেনি।


কর্ম পরিকল্পনা


ইতিবাচক হোন । সিংহের মতো পথ চলুন। এগিয়ে এসে নেতৃত্ব দিন। আপনার বিশ্বাসই সিংহের মত মনোভাব তৈরি করতে পারে। 

নিজের অবচেতন মনে সিংহের মত মানসিকতা গড়ে তুলুন। মনে রাখবেন অবচেতন মন প্রচন্ড শক্তিশালী। নিজের অবচেতন মনের শক্তি বাড়িয়ে তুলুন। বারবার নিজের সিংহের মত আচরণের প্রতিচ্ছবি নিজের অবচেতনে জাগিয়ে তুলুন। আপনি যা ভাববেন তাই হবে।

তাই লক্ষের দিকে এগিয়ে যান, লোকেরা আপনার সম্পর্কে কী চিন্তা করে, তা নিয়ে ভাববেন না। যেটি সঠিক মনে হবে, তা-ই করুন। সিংহের মতো রাজার মতো হাঁটুন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ করুন, অপ্রয়োজনীয় কাজ এড়িয়ে চলুন। আপনার নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। আপনার মনকে, আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে দেবেন না।

নির্ভয়ে কাজ করুন। 

এরকম আরও ঘটনা জানতে ও নিজেকে সাফল্যের পথে নিয়ে যেতে পড়ুন - :লক্ষ‍্যভেদ নেতাজীর পথে সাফল্য লাভ

তথ‍্যসূত্র: লক্ষ‍্যভেদ নেতাজীর পথে সাফল্য লাভ, image - pixel, canva.com


https://www.magicauthor.com/book/lakasayabheda-netajira-pathe-saphalaya-labha-340

https://play.google.com/store/books/details?id=xP_oDwAAQBAJ


Comments

Popular posts from this blog

ক্যুইজ  অন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু                             লেখক  বিভাস ঘোষাল

বিদ্যাসাগর কুইজ-বিভাস ঘোষাল

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু ও তাঁর আাদর্শ